১৮৫৫সালের আশ্বিন মাস সময় মধ্যরাত... ধুতি উত্তরীয় পরিহিত ব্যক্তিটির উন্নত ললাটের ভ্রু কুঞ্চন বুঝিয়ে দিচ্ছে কিছু একটা বিষয়ে তিনি ঘোরতর চিন্তায় আচ্ছন্ন চিন্তা আর কিছুই নয় বিধবা বিবাহ প্রচলিত হওয়া উচিত কি না তদ্ বিষয়ক প্রস্তাবের ওপর এক পুস্তক তিনি মুদ্রন করতে দিয়েছেন তো উক্ত ব্যক্তি এ কথাই ভাবছিলেন এই বইয়ের পিছনে তাঁর পরিশ্রম হয়তো ব্যর্থ হবে মানুষের অবজ্ঞা আর অশ্রদ্ধার কুজ্ঝটিকার অন্তর্জালে।
কিন্তু বস্তুত উল্টোটা ঘটল যখন পুস্তকটি লোকে আগ্রহের সাথে গ্রহণ করল এবং প্রথম মুদ্রনের পর দ্বিতীয় মুদ্রণের জন্য পরিগৃহীত হল.. তখন যেন ব্রাহ্মণ সন্তানের অন্তঃতেজের স্ফূরণ হল.. নতুন উদ্যমের সাথে তিনি বদ্ধপরিকর হলেন বিধবা বিবাহ আইন পাশ করার সংকল্পে।
ফলস্বরূপ ১৮৫৬ সালের ৭ইডিসেম্বর আইন পাস হল বিধবা বিবাহের বাংলার অবোধ বালিকা কিশোরী যুবতীদের জীবনে যেন সাধিত এক গ্লানিময় জীবনের পরিসমাপ্তি। অগনিত বিধবারা যেন তাদের যন্ত্রণাবিদ্ধ জীবনের যবনিকা পাতের এ কাণ্ডারি কে আশীর্বাদ করতে লাগলেন।
পুরুষ শ্রেষ্ঠ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বুঝেছিলেন নারীদের অপরিমেয় যাতনাময় আখ্যানকে... নারী শিক্ষার অগ্রগতির ধারকএই মানুষটি দূরদর্শিতার আখ্যান হয়তো কোনো কলম আর পৃষ্ঠায় লিপিবদ্ধ করতে যাওয়া ধৃষ্টতা... কারণ নিজে একজন নারী হয়ে আজ এই একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়েও বুঝতে পারি প্রতিপদে নারীদের অজস্র ঘিরে থাকা বাধার পাহাড় কে... তাহলে তিনি তৎকালীন কুসংস্কারাচ্ছন্ন অন্ধকার পরাধীন ভারতবর্ষে এই ব্যক্তি কতটা সংগ্রাম করে নারী জাতির কল্যাণ সাধনে ব্রতী হয়েছিলেন।
সব শেষে একটা কথাই অন্তরতম কোন থেকে উঠে আসে....
" হে মানব শ্রেষ্ঠ আপামর বাঙালী তথা সমগ্র নারী জাতির সশ্রদ্ধ নমনে ভূষিত হয়ে ওঠো"
চিরন্তন এ কামনায় আনত হোক হৃদয়।
Continue with Social Accounts
Facebook Googleor already have account Login Here